Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার

কৃষিবিদ মীর নূরুল আলম
খাদ্য ও পুষ্টির অন্যতম উৎস হলো ফল। ফল আবাদের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু খুবই উপযোগী। বাংলাদেশের ফল স¦াদে, গন্ধে, বর্ণে ও পুষ্টিমানে আকর্ষণীয় ও বৈচিত্র্যময়। ফলদবৃক্ষ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণের প্রধান উৎস হিসাবে কাজ করে। তাছাড়া ফলের ভেষজ গুণাবলিও অনেক। আমাদের খাদ্য, পুষ্টি, ভিটামিনের চাহিদাপূরণ, শারীরিক বৃদ্ধি, মেধার বিকাশ ও রোগ প্রতিরোধে ফলের ভ‚মিকা অপরিসীম।
বাংলাদেশে ফলের প্রায় ১৩০ প্রজাতি রয়েছে যার মধ্যে ৭০টি ফলের চাষ হয়।  পুষ্টিবিদদের মতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাথাপিছু  দৈনিক ২০০ গ্রাম  ফল খাওয়া উচিত। অথচ আমাদের দেশে ফলের প্রাপ্যতা মাত্র ৭৮ গ্রাম/প্রতিদিন/প্রতিজন।  ফল আমাদের খাদ্য ও পুষ্টির একটি অন্যতম উৎস। বছরব্যাপী পুষ্টির নিশ্চয়তার জন্য সারা বছর                সুষমভাবে ফল উৎপাদন হওয়া দরকার । জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফলের প্রাপ্যতা শতকরা  ১৯ ভাগ, মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফলের প্রাপ্যতা শতকরা  ৬০ ভাগ এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফলের প্রাপ্যতা শতকরা  ২১ ভাগ। শীতকালে ফল প্রাপ্তির পরিমাণ কম। এই সময়ে ফল খাওয়ার  সুযোগের অভাবে মানুষের বিশেষ করে দেশের  গ্রামীণ মা ও শিশুদের অপুষ্টি জনিত রোগ লক্ষ্য করা যায়। তাই বিকল্প খাদ্য হিসাবে ও সুষম খাবার গ্রহণে ফলের অবদান অতুলনীয়।
ফলই বল। প্রতিটি মানুষের সুস্থ সবল থাকার জন্য ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান বিশেষত ভিটামিন, খনিজ এর অন্যতম উৎস ফল। এছাড়াও আমিষ, শর্করা, চর্বি, পানি এর সহজ উৎস হলো ফল। ফল আমরা       কাঁচাপাকা অবস্থায় সরাসরি খেয়ে থাকি। ফলে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদানের অপচয় কম হয়। রান্না করতে হয় না বলে ভিটামিন সি বিনষ্ট হয় না। তাই পুষ্টির নিশ্চয়তায় ফলই উত্তম। ফলে বিদ্যমান  জৈব এসিড  ও এনজাইম হজমে সাহায্য করে। লেবু জাতীয় ফলে সাইট্রিক এসিড, তেঁতুলে টারটারিক এসিড থাকে। ফলে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রকার খনিজ উপাদান ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস দেহের বিপাক কার্যাবলি স্বাভাবিক রাখতে   সহায়তা করে। ফলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এতে একদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে এবং ফল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। ১  হেক্টর জমিতে ফল উৎপাদনের জন্য বার্ষিক দিনে ৮৬০ জন লোকের দরকার হয়। ২০০১৭-২০১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৩০০৪.৪৯৯ মেট্রিক টন ফল বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছিল। বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে  ফলের           আওতাধীন জমির পরিমাণ (বাণিজ্যিক ফল বাগান ও বসতবাড়ি বাগানসহ) ছিল ৭.২৪ লাখ হেক্টর এবং তা থেকে ১২১.১৩ লাখ মেট্রিক টন ফল উৎপাদিত হয়। (বাংলাদেশের ফল উৎপাদনের তথ্যাবলি ছকে দেয়া হয়েছে।)
জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই অভীষ্ট (এসডিজি)-২ তে উল্লেখ আছে ক্ষুধা থেকে মুক্তি, খাদ্যের নিরাপত্তা বিধান, পুষ্টির মান উন্নয়ন এবং কৃষি ক্ষেত্রে টেকসই কর্মপদ্ধতির বিকাশ সাধন। টেকসই উন্নয়নের  একটি প্রধান লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা নির্মূল করা এবং সবার জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের আর একটি প্রধান লক্ষ্য। খাদ্য নিরাপত্তার অপরিহার্য্য উপাদান হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন। তাই নিরাপদ ফল উৎপাদনের জন্য সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সাধারণত ফল গাছ লাগানোর ২-৪ বছর পর ফল পাওয়া যায়। উৎকৃষ্ট মানের ফল পেতে আমাদের যে বিষয়গুলির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তা হচ্ছে সরকারি হর্টিকালচার সেন্টার, বিশ্বস্ত নার্সারি থেকে উন্নত মানের উৎকৃষ্ট জাতের সুস্থ সবল চারা কলম সংগ্রহ করা, সঠিকভাবে গর্ত তৈরি ও সার প্রয়োগ, সময়মতো ও সঠিক দূরত্বে রোপণ, খুঁটি এবং খাঁচা দিয়ে চারা রক্ষা করা, রোপণকৃত চারার যথাযথ যতœ নেয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, প্রয়োজনে চারার গোড়ায় মাটি দেয়া, সুষম মাত্রায় জৈব ও অজৈব সার ব্যবহার, প্রয়োজনীয় সেচ ও পানি নিকাশের ব্যবস্থা করা, পোকামাকড় ও রোগবালাই দমন করা, এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎব চৎধপঃরপবং (এঅচ) পদ্ধতি অনুসরণ করা ইত্যাদি।
সূত্র: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে অনন্য ভ‚মিকা রাখছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বে ২৮তম, বিশেষ করে আম উৎপাদনে বিশ্বে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশে উৎপাদিত আমের পরিমাণ ছিল ১২.৮৮ লাখ মেট্রিক টন। বসতবাড়িতে ফলবাগান স্থাপন, নগরীতে ছাদবাগান স্থাপন বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সারা দেশে নারিকেল, তাল ও খেজুর চাষ বৃদ্ধিও কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দেশি প্রচলিত,  অপ্রচলিত ফলচাষে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছে ও বিদেশি ফল চাষে উৎসাহ অব্যাহত রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের দপ্তর ও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে  উদ্যানতাত্তি¡ক ফসলের উৎপাদন বাড়াতে যে সকল  কাজ করা হচ্ছে-
১.     ফল গাছের উন্নত মানের চারা কলম উৎপাদন ও বিতরণ;
২.     জাতীয় পর্যায়ে ফল, সবজি, মধু মেলার আয়োজনের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা;
৩.     জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষ মেলা ও বৃক্ষ রোপণ পক্ষ পালনের মাধ্যমে বৃক্ষ রোপণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা;
৪.      প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে চাষিদের দক্ষ করে গড়ে তোলা;
৫.     প্রকল্পের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ফল বাগান সৃজন ও উচ্চমূল্যের সবজি উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা করা;
৬.     নতুন ফল  ও ফলের নতুন নতুন জাত সম্প্রসারণ ( যেমন-ড্রাগনফ্রুট, জাবাটিকাবা, রাম্বুটান, এভোকেডো);
৭.     খাটো জাতের নারিকেল সম্প্রসারণ;
৮.     পাহাড়ে ফল বাগান সৃজন;
৯.     বসতবাড়িতে ব্যাপক ফল গাছ রোপণ;
১০.     ছাদে বাগান;
১১.     সৌদি খেজুরসহ রাস্তার দু’পাশে ধারে তাল-খেজুর গাছ রোপণ।
পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ফল উৎপাদন ও সম্প্রসারণের জন্য কতিপয় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন । তা হলো  বছরব্যাপী ফলের প্রয়োজনীয়  প্রাপ্যতা  নিশ্চিত করা, বানিজ্যিক ফল বাগান করার সময় আগাম, মধ্যম ও নাবী জাতের বিষয়গুলি বিবেচনা করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল গ্রহণে সাধারন জনগণকে সচেতন করা, ফল সংগ্রহোত্তর অপচয় কমানো, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ফল সম্প্রসারণে ভবিষ্যতে যে সব পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে তা হলো- হাইব্রিডাইজেশনের মাধ্যমে নারিকেল চারা হর্টিকালচার সেন্টারে উৎপাদন; টিস্যুকালচার ল্যাব স্থাপন ও পেঁপে, কলা, আনারস চারা উৎপাদন; আম ও পেয়ারা রপ্তানির উদ্দেশ্যে উৎপাদন; ফল আমদানি কমিয়ে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা; ফলের মৌসুম বৃদ্ধি করা যেমন-মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আম উৎপাদনের ব্যবস্থা করা, লিচুর মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা; ফ্রুট জোনিং করা; পাহাড়ি এলাকাকে ফল চাষের আওতায় নিয়ে আসা; ফলের নতুন নতুন উন্নত জাত সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ ফল উৎপাদনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কৃষি খাতে বায়োটেকনোলজি, ফেরোমন ফাঁদ, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (ওহঃবমৎধঃবফ চবংঃ গধহধমবসবহঃ (ওচগ), সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা  (ওহঃবমৎধঃবফ ঈৎড়ঢ় গধহধমবসবহঃ (ওঈগ),  উত্তম কৃষি পদ্ধতি (এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎব চৎধপঃরপবং (এঅচ) ইত্যাদি ব্যবহার করে যথাসম্ভব বালাইনাশকের ব্যবহার মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। নিরাপদ ফল উৎপাদন ও তার সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও বিদেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে সম্ভাবনাময় দেশ হিসাবে ভ‚মিকা রাখতে পারে। য়
*মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা। ফোন : ৯১৪০৮৫০, মেইল : dg@dae.gov.bd

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon